Thursday, November 19, 2009

কাজ / আখতার হুসেন

...

মা ও বলেন , বাবাও বলেন
অভিযোগের সুরে
আমি নাকি আলসে এবং কুড়ে।
ঘরের কোনো কাজ করি না মিনু যেমন করে
সারাটা দিন ধরে।

তাইতো মিনু সবার কাছে লক্ষ্মী সোনা মেয়ে
বায়না যখন যা ধরে তাই তখ্খুনি যায় পেয়ে।

মিনুর কী কাজ ? কখনো বা মসলা পাতি বাটে
মা’র হয়ে বাসন-থালা যায় যে নিয়ে ঘাটে।
কলসি ভরে জল আনে আর
কাঁথায় নক্সা বোনে
কখনো বা ঝাড় দিয়ে যায়
দাওয়ায় , ঘরের কোণে।

আর আমি ? কাজ করি যে কতো সারাটা দিন ধরে
সে সব কথা একবারও কেউ , কেউ বলে না ঘরে।
কালবোশেখীর ঝড়
ভাঙলে পরে গাছের ডানা , পাখির বাসা-ঘর
আমি যে যাই ছুটে
খড়-কুটো সব খুঁজি গিয়ে মাঠপারে , প্রান্তরে
ওদের বাসা দেই বানিয়ে সযত্নে তারপরে।

এগুলো নয় কাজ ?
মা-বাবাকে বলবো গিয়ে আজ।
কাকলীদের খুড়ো
বড্ডো যে থুত্থুরো
শ্বাস নেন খুব ঘন ঘন পথ চলতে গেলে
থমকে দাঁড়ান চৌ-মাথাটার সাঁকোর ধারে এলে।

তখন ছুটে কেউ তো আসে নাকো
আমিই ছুটি আমিই তাঁকে পার করিয়ে
দেই যে বাঁশের সাঁকো।

এগুলো নয় কাজ ?
মা-বাবাকে বলবো গিয়ে আজ।
আকাশ-ভাঙা ঝমঝমানো ভর বর্ষা শেষে
দূর-বিদেশের রং বে-রঙের পাখিরা সব এসে-
শালুক বিলে বসায় যখন মেলা
মনের সুখে গান গায় আর কেবল খেলে খেলা ;
শুনতে পেয়ে তাদের সে গান , হরেক রকম ডাক
ছুটে আসে শালুক বিলে শিকারীদের ঝাঁক-
তখন আমি ঢিলের পরে ঢিলটা ওদের ছুঁড়ে
শিকারীদের নাগাল থেকে দেই পাঠিয়ে দূরে।

এগুলো নয় কাজ ?
মা-বাবাকে বলবো গিয়ে আজ।
...

No comments:

Post a Comment